ফরিদুল ইসলাম রানা, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : লালনিরহাটের হাতিবান্ধায় তিন সন্তানের জননীর সাথে কলেজ শিক্ষকের অবৈধ মেলামেশায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাতিবান্ধা উপজেলার ৬ নং ওয়ার্ড এর দোলাপাড়ায়।
গত ২৭ এপ্রিল ২০০৮ সালে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী উনিয়নের মরিয়ম আক্তার লাকির সাথে হাতিবান্ধা উপজেলার দোলাপাড়ার রাশেদ মেনন বিদ্যুতের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ছোট-খাট ঝগড়া থাকলেও পারিবারিকভাবেই সমাধানের মাধ্যমে সংসার চলাকালে তাদের কোল জুড়ে ৩টি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। তবে এর মাঝে একই উপজেলার মো. জাহিদ হোসেন দুলুর সাথে স্কুল শিক্ষিকা লাকির গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এতে স্বামী বিদ্যুত রাগারাগি করলে ২ জনের মাঝে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয়। এভাবে চলতে থাকে তাদের সংসার। এর মাঝেই বিদ্যুৎ চাকুরীর সুবাদে বাড়ির বাহিরে গেলে প্রেমিক দুলুকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে আসে লাকি বেগম এবং একান্ত সময় কাটান নিয়মিত। এর মাঝেই একদিন দুই জনকে একই রুমে দেখেন বিদ্যুৎ এর ছোট ভাই। এতে দুলু দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। তাতে রাগারাগির মাধ্যমে লাকি বাবার বাসায় চলে আসে। এরপর পারিবারিকভাবে তাদেরকে আবারও মিলিয়ে দিয়ে সংসার চলতে থাকলেও কোনভাবেই ভুলতে পারে না প্রেমিক দুলুকে। এখানেই শেষ নয়, স্বামী বিদ্যুতকে ফাঁসাতে প্রেমিক দুলু এবং লাকি আঁকেন নতুন ফন্দি। স্বামীকে কিভাবে সরিয়ে দুলুর সাথে সংসার করবে সে নিয়ে চলে নানান পরিকল্পনা। এর মাঝেই দেখা দেয় নতুন এক সমস্যা, লাকি বেগমের সাথে বিদ্যুতের বিয়ের সময় কাবিন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫শ ৫৫ টাকা হলেও ২০১৪ সালে সেটা পরিবর্তন করে বুড়িমারী ইউনিয়নের কাজী মো. আব্দুল বারেকের সাথে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫শ৫৫ টাকা করেন এ নিয়েও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্বামী বিদ্যুত।
এ বিষয়ে এলকাবাসী জানান, দুলুর এরকম আরো কাহিনি আছে, সে এভাবে নিজে ও তার বাহিনী দিয়ে পরোকীয়া করে কয়েকটি সংসার নষ্ট করেছে। দুলুর বিরুদ্ধে তার কলেজে চাকরির নাম করে মোটা অংকের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ ও আছে বলে অনেকে জানান।
এ বিষয়ে লাকি বেগমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি দুলুর সাথে কথা বলি এটা সত্য তবে প্রেম নয়। তবে কেন কথা বলেন দুলুর সাথে আপনার স্বামীর অভিযোগ থাকার পরেও? তবে তিনি কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেন নি। সংসার করবেন কি না প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান আমি সংসার করব।
এ বিষয় স্বামী বিদ্যুতের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আমার ৩ মেয়ের কথা চিন্তা করে সব সহ্য করে ৩টি বছর পরোকিয়ার বিষয়টি সমাধান করতে চেয়েছি তবে কোনভাবেই তাদেরকে আলাদা করতে না পেরে তালাক নোটিস পাটিয়েছি, এখনো জবাব পাইনি আশা করি ৯০ দিনের মধ্যে পাব। আপনার স্ত্রীর এর আগে অন্য কোন সমস্যা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এর আগেও আমার বাসা থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায়।
আমি এর পরেও সংসার টিকিয়ে রাখতে তাকে নিয়ে আসি কিন্তু বাড়িতে ফিরে আমার বাড়িতে আমার পরিবারের কাউকে আসতে দেয় না এমনকি আমার মাকেও আসতে দেয় না। সে আমার খেয়াল রাখে না। সে বাচ্চাদেরকেও সময় দেয় না। শুধু তার প্রেমিক নিয়ে ব্যস্ত থাকে আমি প্রতিবাদ করলেই ঝামেলা লেগে যায়।
আমি এক্সিডেন্ট করে ক্লিনিকে থাকা কালিন সে আমার কাছে না থেকে প্রেমিক দুলুর সাথে মটর সাইকেলে করে আমাকে দেখতে গিয়ে সেই রাতে বাসায় না ফিরে রংপুরে এক হোটেলে রাত কাটান দুই জনে। আমি আইনের মাধ্যমে সব কিছু সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।
বিদ্যুতের মা অব. স্কুল শিক্ষিকা জানান, পারিবারিক পদমর্যাদার কারণে আমি নিজে বসে সব সময় সমাধান করতাম, তবে এখন লাকি ও তার ভাই লিটন যেভাবে আমার পরিবার ও ছেলের বিরুদ্ধে লেগেছে তাতে করে আমরা সব সময় ভয়ের মধ্যে আছি।
দ্বিতীয় বিয়ের কাবিনের বিষয়ে অভিযুক্ত কাজীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সম্ভব হয়নি।